৭ মার্চের ভাষণের মূল বিষয়বস্তু কয়টি

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ভাষণ দেওয়া হয় ৭ ই মার্চ । এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান যা বর্তমানে বাংলাদেশ , এই বাংলাদেশের মানুষের সামনে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন ।  সেই ঐতিহাসিক ভাষণের পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ । ৭ মার্চের ভাষণের মূল বিষয় কয়টি ছিল সে বিষয়ে যদি জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন । 


এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি আরও  যে বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন তা হল ৭  মার্চের ভাষণ  সর্বশেষ  কোন ভাষায় অনুমদিত হয় । এছাড়াও এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার ফলে আপনি ৭ ই মার্চ ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সংগ্রামের  যে ডাক দেওয়া হয়েছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন । 

ভুমিকা 

বাঙালি জাতির জন্য ৭ই মার্চের ভাষণ একটি গৌরবময় এবং ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ডাক । এই ৭ মার্চের ভাষনে বাংলার মানুষ উদ্ভাবিত হয় এবং স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধুর একটি কথা মানুষকে গভীরভাবে অনুপ্রেরিত করেন । সে কথাটি ছিল ''রক্ত যখন দিয়েছি আরো দেব তবুও এ দেশকে স্বাধীন করে ছাড়বো'' । 

বঙ্গবন্ধুর সেই কথা কে কেন্দ্র করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান, বর্তমান বাংলাদেশ এর সমস্ত মানুষজন সে স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । তাদের এই যুদ্ধ, আত্মত্যাগ, এবং রক্তের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ পেয়েছি । সেই ৭ মার্চের ভাষণে কয়েকটি মূল বিষয়বস্তু ছিল । সেই সম্পর্কে আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে । চলুন আর্টিকেলটি পড়ে সেই মূল বিষয়বস্তুগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক । 

আরও পড়ুন ঃ শীতকালীন সবজির উপকারিতা-সবজি চাষের সময় সূচি জেনে নিন

 ৭ মার্চের ভাষণের মূল বিষয়বস্তু কয়টি

৭ই মার্চ এই দিনটি ছিল বাঙালি জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক এবং গৌরবময় দিন । ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য এবং এ বাংলাকে স্বাধীন করার জন্য একটি অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন । সে ভাষণটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে । যার বর্তমান নাম (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ) । 

ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কয়েকটি মূল বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেন । এবং সে অনুযায়ী তিনি সকলের সামনে সে মূল বিষয়বস্তুগুলো সম্পর্কে ভাষণ দেন । ১০ মার্চ ঢাকায় রাজনৈতিক আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান একটি অনুষ্ঠানের ডাক দেন । সে আমন্ত্রণকে প্রত্যাখ্যান করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কয়েকটি শর্ত আরোপ করেন । 

  • সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে,
  • সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে আনতে হবে,
  • সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরীহ ও নিরস্ত্র লোকদের হত্যার তদন্ত করতে হবে,  
  • নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে । 
এই চারটি শর্ত ছিল ৭ মার্চ ভাষণের মূল বিষয়বস্তু । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন যে এই চারটি শর্ত যদি পূরণ করা হয় তাহলে তিনি জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যাবেন কি যাবেন না তা বিবেচনা করে দেখবেন । তারপর তিনি জনগণকে স্বাধীনতার সংগ্রামের জন্য অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন ।  


৭ মার্চের ভাষণ সর্বশেষ কোন ভাষায় অনূদিত হয়


৭ মার্চের ভাষণটি দেওয়া হয়েছিল ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে । যার বর্তমান নাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান । বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন । সেই ৭ মার্চের ভাষণে ১৭ টি ভাষা অনুমোদিত হয়েছিল । তবে সর্বশেষ যে সে অনুমোদিত হয়েছিল চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেই । 

৭ ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি সর্বশেষ ম্রো ভাষায় অনুমোদিত করা হয়েছিল । এ ভাষাটি একজন পাহাড়ি জাতি গোষ্ঠী লিখেছিলেন । যার নাম ইয়াংঙ্গান ম্রো ।  ম্রো ভাষায় ৭ এ মার্চের ভাষণকে অনুমোদিত করার চিন্তা করা হয় যখন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই পাহারি লেখক ইয়ঙ্গান এর কাছে থেকে পাহাড়ি অঞ্চলে ঘটে যাওয়া যুদ্ধের কথা শোনেন ।  

এই ম্রো লেখক ১০০ টি রুপকথার গল্প নিয়ে একটি বই এর উন্মোচন ঘটান । সে লেখকের ধারণা যে যদি ম্রো ভাষায় ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ অনুমোদিত করা হয় তাহলে পাহাড়ি অঞ্চলের সকল জনগণ এ ঐতিহাসিক ভাষার সম্পর্কে জানতে পারবে এবং বুঝতে পারবে । এ কারণে ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ম্রো ভাষায় সর্বশেষ অনুমোদিত করা হয় । 

৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট 

১৯৭০ সালের ডিসেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি নির্বাচন হয় । সে নির্বাচনে আওয়ামীলীগ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ১৬৭ টি আসন জয় লাভ করেন । বাংলাদেশ শেখ মুজিবর রহমানের এই নির্বাচনে পাকিস্তান এর জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে । 

এরপর পাকিস্তানের যে সকল সামরিক শাসক গোষ্ঠীগণ ছিল, তারা এ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর বিলম্ব করতে শুরু করে । তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল পশ্চিম পাকিস্তান এর হাতে ক্ষমতা  কুক্ষিগত করে রাখা । তারপর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান একটি অধিবেশনের আহ্বান করেন । 

সে অধিবেশনটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য ১ লা মার্চ মুলতানি ঘোষণা করা হয় । এ ঘটনাটি যখন পূর্ব পাকিস্তানের কানে যায় তখন তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন । তারপর আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হরতালের ঘোষণা দেন । তারপর ২ রা মার্চ ঢাকায় প্রথম হরতাল পালিত হয় এবং ৩ রা  মার্চ সারা দেশ জুড়ে একযোগে হরতাল পালন করা হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে । 

এরপর ৩রা মার্চ একটি বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয় পল্টন ময়দানে । এবং সেই জনসভায় সারা পূর্ব বাংলায় অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । সেই কর্মসূচি ঘোষণার পর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে সংগ্রহ পূর্ব বাংলার জনগণ একত্রিত হয় এবং জনসভায় সকলের সামিল হয় ।  

ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে উক্ত পটভূমিকে কেন্দ্র করে ৭ ই মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন বাংলাদেশের মুজিবুর রহমান । এবং সেই ঐতিহাসিক ভাষণে বাংলার মানুষ অনুপ্রেরিত হয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে নেমে পড়েন । ৭ ই মার্চের এ ভাষণটি ছিল ১৮ মিনিটের । সেই ১৮ মিনিটের ভাষণ সংগ্রহ মানুষকে উদ্ভাবিত করে এবং অনুপ্রেরিত করেন । 

আরও পড়ুন ঃ বাংলাদেশে সবচেয়ে কম দামে স্মার্টফোন গুলো সম্পর্কে জেনে নিন

তাদের এই অনুপ্রেরণার কারণে আজ আমরা মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে পারছি । এবং সেদিনের অনুপ্রেরণিত ভাষণটি এবং ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আজ আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ভাষণটি ঐতিহাসিক ভাষণ হিসেবে চিরদিন ইতিহাসের পাতায় গৌরবময় হয়ে থাকবে । 

লেখকের মন্তব্য 

প্রিয় পাঠক আশা করি এ আর্টিকেলটি পড়ে ৭ মার্চের ভাষণের মূল বিষয়বস্তু কয়টি এবং ৭ মার্চের ভাষণ সর্বশেষ কোন ভাষায় অনুমোদিত হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন । এছাড়াও ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য জেনেছেন এ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে । । আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ । 

এ আর্টিকেলটি থেকে যদি কোন প্রকার উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন । এবং ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষাকে চিরদিন স্মরণে রাখবেন । 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url