পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায় সম্পর্কে যেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ । প্রিয় পাঠক ও পাঠিকা আশা করি ভাল
আছেন । আপনারা সকলে হয়তো জানার চেষ্টা করছেন কিভাবে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি
কমাবেন এবং অস্বস্তিকর ভুড়ি কিভাবে কমাবেন । আপনি এই আর্টিকেলটি
থেকে আপনার সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন ।এই আর্টিকেলটিতে পেটের চর্বি কমানোর ৯
টি সহজ উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।
আপনি যদি পেটের চর্বি কমাতে চান এবং অস্বস্তিকর ভুঁড়ি থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন । আশা করি আর্টিকেলটি পড়লে আপনি আপনার সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন ।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ এই পোস্টের বিভিন্ন অংশ পড়তে চাইলে নিচে ক্লিক করুন ।
- পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়
- অতিরিক্ত খাওয়া বাদ দিতে হবে
- খাবার খাওয়ার সময় আস্তে ধীরে খাবার খাওয়া
- সময় মত খাবার খাওয়া
- ফাস্টফুড জাতীয় খাবার বর্জন করুন
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কে অগ্রাধিকার দেন
- স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন
- পেটের চর্বি সম্বন্ধে সচেতন হওয়া
- পেটের চর্বি জমাট বাঁধার কারণসমূহ
- শেষ কথা
পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়
অতিরিক্ত মেদ কমাতে আমাদের নিয়মিত কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে
। তাহলে শরীরের এবং পেটের অতিরিক্ত চর্বি বা মেদ কমানো সম্ভব
। শরীরে মেদ জমার যেমনি কারণ রয়েছে তেমনিভাবে মেদ
কমানোর বেশ কিছু উপায়ও রয়েছে । এখানে পেটের চর্বি কমানোর ৯
টি উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে পারবেন ।
এই ৯ টি উপায় অবলম্বন করলে শরীরে মেদ জমা হবে না এবং শরীর
স্বাস্থ্য ফির থাকবে । এবং যাদের অতিরিক্ত মেদ ভা ভুড়ি রয়েছে
তারা এই ৯ উপায়ে শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা ভুড়ি কমাতে পারবেন
। তো আজকের এই মেদ বা ভুড়ি কমানোর ৯ টি উপায় সম্পর্কে
চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক ।
আরও পড়ুন ঃ শিশুর পুষ্টি হীনতা দূর করার উপায় বিস্তারিত
অতিরিক্ত খাওয়া বাদ দিতে হবে
আমরা অনেক সময় অনেক কিছু খেয়ে থাকি । প্রয়োজনের থেকেও বেশি খেয়ে ফেলি
। কিন্তু এই অতিরিক্ত খাবার আমাদের শরীরের পাকস্থলীতে গিয়ে পৌঁছায়
এবং সঠিক মাত্রায় হজম করতে পারেনা । এজন্য এই অতিরিক্ত খাবার
শরীরে জমা হয়ে যায় এবং সেখান থেকে চর্বি তৈরি হয়ে সারা শরীরে চর্বি
জমে যায় ।
এবং এর কারণে পেট ফুলে যায় , যেটাকে আমরা ভুড়ি বলে থাকি
। এ অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে চর্বি জমে যায় এবং
ভুড়ি বেড়ে যায় । এছাড়াও অতিরিক্ত খাবার হজম করতে বাধা প্রাপ্ত
হয় । এর ফলে বদহজম হয় এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়
। তাই আমাদের উচিত খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া ।
প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খেতে হবে
। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে । কারণ অতিরিক্ত খাবার
আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর । এবং খাবার খাওয়ার সময় চরবিহীন
ও তেল যুক্ত খাবার বাদ দিয়ে পুষ্টিকর ও ভিটামিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে
। কারণ আমাদের দেহে প্রতিক্ষেত্রে পুষ্টির প্রয়োজন ।
খাবার খাওয়ার সময় আস্তে ধীরে খাবার খাওয়া
আমরা যখন খাবার খায় তখন সে খাবার খাওয়ার পর খাবারগুলো পেটে যায়
। খাবার পেটে যাওয়ার পর আমাদের পাকস্থলী থেকে আমাদের মস্তিষ্কে একটা
সংকেত পৌঁছায় । সহজ ভাষায় বলতে গেলে পেটের সাথে মস্তিষ্কের একটি সম্পর্ক
সৃষ্টি হয় । এছাড়াও বলতে পারেন পাকস্থলের সাথে ব্রেনের কথাবার্তা হয়
।
আমরা যখন খাবার খায় সে খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের পেট ভরেছে কিনা তা বুঝতে
মস্তিষ্কের সময় লাগে ২০ মিনিট । কিন্তু যখন আমরা দ্রুত খাবার
খায় তখন এই পাকস্থলির সাথে মস্তিষ্কের সম্পৃক্ত যে সম্পর্ক রয়েছে
তাতে ব্যাঘাত ঘটে । এবং দ্রুত খাবার খাওয়ার কারণে সে
খাবারগুলো ভালোভাবে না চিবিয়ে খাওয়ার কারণে সেগুলো হজম হতে বাধা প্রাপ্ত
হয় ।
এ হজম প্রক্রিয়া বাধা প্রাপ্ত হওয়ার কারণে আমাদের বদহজম হয় এবং পেট খারাপ
হয় । তাই খাবার সময় আস্তে ধীরে খাবার খাওয়া উচিত । এবং যখন আমরা
খাবার খায় তখন সে খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে তারপর সেটি পেটের ভিতর নিতে হবে
। খাবার না চিবিয়ে খাওয়ার কারণে পেটের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়
।
সময় মত খাবার খাওয়া
আমরা যখন খাবার খায় তখন সে খাবার গিয়ে আমাদের পাকস্থলীতে পৌঁছায় । এবং
সেখান থেকে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানি ও খাবার আলাদা
হয়ে যায় । এরপর সেখান থেকে বিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং আমাদের দেহে শক্তি
উৎপাদন হয় । কিন্তু আমরা যদি সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ না করি তবে আমাদের
শরীরে যে খাবারের ঘাটতি সেটা থেকে যায় ।
আমরা অনেকে সকালের খাবার দুপুরে খায় এবং দুপুরের খাবার বিকালে খায়
। কিন্তু এই বিষয়টা মোটেও ঠিক নয় । সব সময় খাবার গ্রহণ করতে হবে
সময় মত এবং সঠিক মাত্রায় । তবেই সেই খাবার থেকে সঠিক পুষ্টি উপাদান
এবং সঠিক মাত্রায় ভিটামিন পাওয়া সম্ভব । এক বেলার খাবার অন্য বেলায়
খাওয়া বাদ দিতে হবে ।
আরও পড়ুন ঃ কোন ভিটামিনের অভাবে কি রোগ হয় বিস্তারিত যেনে নিন
এবং কোনবেলার খাবার বাদ দেওয়া ঠিক নয় । আমরা অনেকেই সকালের নাস্তা বাদ
দিয়ে দুপুরে খাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলি । এই এক বেলার খাওয়া বাদ দিয়ে
ওপর বেলায় একসঙ্গে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার
প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে । এ কারণে শরীরের মেদ বা সম্ভাবনা বেশি থাকে
।
ফাস্টফুড জাতীয় খাবার বর্জন করুন
এবং যাদের অতিরিক্ত মাত্রায় ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস
রয়েছে তাদেরকে এই ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে
। কারণ প্রতিনিয়ত এ সকল খাবার শরীরের জন্য ঝুঁকির কারণ । তাই যত দ্রুত
সম্ভব সকল খাবার পরিহার করতে হবে । এবং যতোটুকু সম্ভব পুষ্টিকর
খাবার গ্রহণ করতে হবে ।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কে অগ্রাধিকার দেন
আমরা প্রতিদিন সকালে নাস্তা করে থাকি । কিন্তু এই নাস্তায় বিভিন্ন রকম
খাবার খায় অথচ যে সকল খাবারগুলো পুষ্টি সম্পন্ন এবং সাইবার সমৃদ্ধির সকল খাবার
আমরা কম খায় । এর কারণে আমাদের দেহের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়
। সকালের নাস্তায় প্রতিদিন ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত
। এবং কর্তব্য বলা চলে ।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে । ফাইবার সমৃদ্ধ
খাবারের মধ্যে ফলমূল, শাক-সবজি এবং শস্য সকল খাবার বেছে নিন
। ফাইবার ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধার
নিয়ন্ত্রণ করে থাকে । ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে পেট ফোলাভাব কমে এবং
পেটের চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে ।
স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন
স্ট্রেস দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে । বিশেষ করে এর অবদান
বেশি পেটের চর্বি জামাতে ।স্ট্রেস পেটের চর্বি জমাতে সাহায্য করে
। এবং শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে ।তাই সকাল বেলা
মেডিটেশন করতে হবে । এতে করে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং
শরীরের চর্বি জমাট বাঁধতে বাধা প্রদান করে ।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো
দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো অত্যাবশ্যক । পর্যাপ্ত
পরিমাণে ঘুমের অভাবে দেহের হরমোন নিয়ন্ত্রণকে ব্যাহত করে । ফলে ঘন ঘন
ক্ষুদা লাগে এবং ক্ষুধার মাত্রা বৃদ্ধি পায় । আর এ কারণে আমরা ঘন ঘন
এবং বেশি বেশি খাবার গ্রহণ করে ফেলি । এই অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার কারণে পেটে
চর্বি জমাট বাঁধে ।
তাই প্রতিদিন নিয়মিত ৭-৯ ঘন্টা ঘুমানো জরুরী । প্রতিদিন
৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন । এবং অতিরিক্ত রাত
জাগা কিংবা বিনা পরিশ্রমে দিন কাটানো বন্ধ করুন
। এতে শরীর সুস্থ থাকবে এবং শরীরের চর্বি জমাট বাঁধতে বাধা
প্রাপ্ত হবে ।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা ভুড়ি কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন । কারণ ব্যায়াম
করার ফলে শরীরের যে পরিশ্রম হয় তা থেকে শরীরের চর্বি কমে যায় এবং বডি
ফিটনেস ভালো থাকে । প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ থেকে
৪০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরী । ব্যায়াম করার
পাশাপাশি পুষ্টিকর ও ভিটামিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে ।
আরও পড়ুন ঃ ক্যান্সার প্রতিরোধে ১৩ খাদ্য - ক্যান্সার প্রতিরোধক সবজি
নিয়মিত ব্যায়াম করার কারণে আপনি আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে পারবেন এবং
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন । তাই প্রতিদিন ব্যায়াম করুন এবং বডি
ফিটনেস ভালো রাখুন । শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ও পেটের চর্বি কমাতে
ব্যায়াম করা অত্যাবশক ।
পেটের চর্বি সম্বন্ধে সচেতন হওয়া
আমাদের যে সকল খারাপ দিকগুলো প্রকাশ পায় সেগুলোর আসল কারণ হলাম আমরা নিজেরাই
।আমাদের অভ্যাসের কারণে আমরা প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়ে
। আমাদের অসচেতনতার কারণে আমাদের দেহের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া ঘটে থাকে
। ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের দেহের চর্বি জমাট বাঁধতে আমাদের অসচেতনতা রয়েছে
।
যে সকল কারণে শরীরে চর্বি জমাট বাঁধে সে সকল অভ্যাসগুলো আমাদেরকে পরিহার করতে হবে
।এবং নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে । সবসময় সচেতন থাকতে
হবে যাতে আমাদের শরীর এবং বডি ফিটনেস ঠিক থাকে । এবং খাবারের প্রতি
বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে ।
পেটের চর্বি জমাট বাঁধার কারণসমূহ
পেটের চর্বি বৃদ্ধির মূল কারণ অস্বাস্থ্যকর এবং চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা
। এ চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে চর্বি জট বাধে
এবং আমাদের ভুড়ি বেড়ে যায় । আমাদের জেনে রাখা উচিত কি কি কারণে
শরীরের চর্বি জমাট বাঁধে এবং ভুড়ি বেড়ে যায় । এবং এর কারণসমূহ গুলো
পরিহার করতে হবে ।
-
পেটের চর্বি জমাট বাঁধতে শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে
। কারণ শর্করা জাতীয় খাবারে পেটে দ্রুত চর্বি জমাট বাঁধে ।
-
পোলাও, , বিরিয়ানি , পরোটা , লুচি , মিষ্টি এবং কোমল
পানীয় পরিহার করতে হবে । কারণ এ সকল খাবার গ্রহণের ফলে পেটে চর্বি
জমাট বাঁধে।
-
সারাক্ষণ শুয়ে থাকা কিংবা চেয়ারে বসে থাকার কারণে এবং চেয়ারে বসে থেকে
কাজ করার কারণে পেটে চর্বি জমাট বাঁধতে পারে ।
-
ফাস্টফুড ও চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে পেটের চর্বি জমাট বাধে
।
-
নিয়মিত পরিশ্রম না করার কারণে শরীরের চর্বি জমা বাঁধতে পারে ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url